বিস্তারিত: ব্যায়াম কত প্রকার ও কি কি | Types of Exercise and Health Benefits

ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা, হাঁটার উপকারিতা ও অপকারিতা, সকালের হাঁটার উপকারিতা, ওজন কমাতে হাঁটার উপকারিতা, প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটার উপকারিতা, বিকালে হাঁটার উপকারিতা, ওজন কমাতে হাঁটার নিয়ম, হাঁটার অপকারিতা, বেশি হাটলে কি হয়,
  

সুস্থ শরীর গঠন ও স্বাভাবিক বিকাশে ব্যায়াম বিশেষভাবে সহযোগিতা করে থাকে। শরীর সুস্থ ও সবল রাখার জন্যে যেমন খাদ্য অপরিহার্য তেমনি শরীরের গঠন বিন্যাসের জন্যে ও শরীরকে রোগমুক্ত ও সতেজ রাখার জন্যে ব্যায়াম অত্যাবশ্যক। পুষ্টিকর  খাবারই একজন মানুষকে পুরোপুরি সুস্থ রাখতে পারে না, সাথে ব্যায়ামও দরকার। 

আপনি যে বয়সেরই হোন না কেন, ব্যায়াম আপনাকে সুন্দর স্বাস্থ্য, নিরোগ দেহ, সঞ্জীব ও তরতাজা মন এবং সুখময় জীবন যাপনের পূর্ণ নিশ্চয়তা দিচ্ছে। দীর্ঘ জীবন লাভের জন্যেও ব্যায়াম অপরিহার্য। সুতরাং শিশু, কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ সকলেরই নিয়মিত ব্যায়াম করা একান্ত প্রয়োজন । বিভিন্ন রকমের ব্যায়াম রয়েছে। তবে সামগ্রিকভাবে ব্যায়ামকে তিন ভাগে ভাগ করা যেতে পারে।

(ক) সাধারণ ব্যায়াম

(খ) যোগ ব্যায়াম

(গ) যান্ত্রিক ব্যায়াম

নিচে এই তিন প্রকার ব্যায়াম নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো:

সাধারণ ব্যায়াম : কোনো কিছুর সাহায্য ছাড়া যে সব ধরনের ব্যায়াম করা হয় তাকেই আমরা সাধারণ ব্যায়াম রয়েছে-খালি হাতে ব্যায়াম, ছাদে বা খোলা আঙ্গিনায় হাঁটাহাটি, মেঝেতে দাঁড়িয়ে হাত-পা দ্বারা ব্যায়াম করা প্রকৃতি সাধারণ ব্যায়ামের আওতাভুক্ত

যোগ ব্যায়াম: বিশেষ নিয়মের মাধ্যমে যোগ ব‍্যায়াম করা হয়। প্রাচীনকালে সাধকরা এই ব্যায়াম রীতি আবিষ্কার করেন। সাধকরা বিভিন্ন রকমের যোগাসনে বসে এই ব্যায়াম করতেন।

এই ব্যায়াম শরীরের যেমন অনেক উপকার হয় তেমনি মানসিক বিকাশ, ঘটে পরিপূর্ণ রূপে। এটিই হচ্ছে সর্বাধিক নির্ভরযোগ্য ব্যায়াম যা শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, পেশী, অস্থিগুলোকে সুস্থ সজীব ও কার্যকর এবং সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। তাই যোগ ব্যায়ামের গুরুত্ব অধিক। যোগ ব্যায়ামকে ব্যায়ামের মধ্যে সেরা ব্যায়াম বলা যেতে পারে। যোগ ব্যায়াম খুব একটা সহজ নয়। এটি নিয়ম-কানুনের মধ্যে করতে হয়। সুতরাং বেশ জটিলতও বটে।

 যান্ত্রিক ব্যায়াম : বিশেষ যন্ত্র বা কোনো কিছুর সাহায্যে যে ব্যায়াম করা হয়ে থাকে তাকে বলা হয় যন্ত্রের সাহায্যে ব্যায়াম বা যান্ত্রিক ব্যায়াম। আজকাল ব্যায়ামের জন্যে বহুবিধ যন্ত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। এসব যন্ত্র দ্বারা হাত, পা, পেটসহ শরীরের বিভিন্ন মাংশপেশীর ব্যায়াম করা যায়।

যোগ ব্যায়াম আসন

ব্যায়ামের মধ্যে যোগব্যায়ামই হচ্ছে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিতভাবে যোগব্যায়াম করলে শরীর রোগমুক্ত থাকে। আর শরীর রোগমুক্ত থাকলে মনও থাকে সজীব। তবে যোগব্যায়াম করা বেশ কঠিন। নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে তা রপ্ত করতে হয়।

নিচে কতিপয় যোগব্যায়ামের পদ্ধতি তুলে ধরা হচ্ছে। পাঠকবৃন্দ এই ব্যায়ামগুলো নিয়মিত অনুশীলন করলে শারীরিক, মানসিক, সৌন্দর্য বিকাশ প্রভৃতি বিষয়ে উপকৃত হবেন এবং নিরোগ থাকতে পারবেন বলে আমি মনে করি । আসুন তাহলে যোগব্যায়াম নিয়ে আলোচনা শুরু করি।

আসন : প্রকৃত নাম যোগাসন। সাধারণভাবে আসন নামই প্রচলিত।

আসন শব্দের সাধারণ অর্থ হলো: যার উপর উপবেশন করা যায়। যেমন চেয়ার, মাদুর, টুল ইত্যাদি। যোগশাস্ত্রে আসনের ভিন্নতর অর্থ বহন করে। দেহকে নির্দিষ্ট বা বিশেষ ভঙ্গিতে বিনান্ত বা স্থাপিত করে কিছুক্ষণ অবস্থান করার প্রক্রিয়াই হলো আসন। হঠযোগা সাধনার জন্য যে সাতটি সাধনৰিধি আছে, তার একটি বিধি হলো দৃঢ়তা। এই দৃঢ়তাকে ধারণ করার প্রক্রিয়াকেও আসন বলা হয়।

যোগাসনের মাধ্যমে দেহকে সুস্থ, নমনীয় ও সহনশীল করা হয়। এর জন্য কিছু বিধিবদ্ধ দেহভঙ্গিমাকে অনুসরণ করা হয়। যোগীরা দেহকে ধ্যানের উপযুক্ত করে গড়ে তোলার জন্য আসনের চর্চা করতেন। যোগীরা বহুবিধ দেহ ভঙ্গিমার বিন্যাস-চর্চার মধ্য দিয়ে নানা ধরনের আসনের চর্চা করেছেন। ধ্যান দ্বারা অভীষ্ট লক্ষে পৌঁছার জন্য দেহকে বিশেষ ভঙ্গিমায় স্থাপন করলে, ধ্যানের প্রগাঢ়তা বাড়ে।

যোগশাস্ত্রে আসন সংখ্যা নিয়ে মতভেদ আছে। সংহিতা মতে-- মহাদেব চুরাশি লক্ষ আসনের কথা বলেছেন। তবে এর ভিতর ষোল শত আসন উৎকৃষ্ট। এর ভিতর আবার ৩২টি আসন মানুষের জন্য কল্যাণকর। যোগাসনকে মূলত দুটিভাগে ভাগ করা হয়। 

এই ভাগ দুটি হলো: 

ধ্যানাসন : ধ্যানের দ্বারা পরমেশ্বরকে পাওয়ার উপযোগী আসনকে ধ্যানাসন বলা হয়। এর সংখ্যা ২৮টি।

 স্বাস্থ্যাসন: পক্ষান্তরে স্বাস্থ্য উদ্ধার ও শরীর সুস্থ রাখার জন্য আসন হলো-- স্বাস্থ্যাসন। এর সংখ্যা ৫৬টি। সব মিলিয়ে আসন সংখ্যা দাঁড়ায় ৮৪টি।

যোগশাস্ত্রে প্রতিটি আসনেরই রয়েছে সুনির্দিষ্ট নাম। কিন্তু এই নামের সাথে আসন যুক্ত করে উচ্চারণ করা হয়। যেমন--পদ্ম নামক আসনটিকে উল্লেখ করা হয়েছে পদ্মাসন (পদ্ম + আসন) নামে।

আসনগুলোর নাম গ্রহণ করা হয়েছে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির বিভিন্ন প্রকৃতি অনুসারে। যেমন:

১. উদ্ভিদের নামানুসারে : পদ্মাসন, বৃক্ষাসন ইত্যাদি।

২. প্রাণীকুলের নামানুসারে বৃষ্টিকাসন, মৎস্যাসন ইত্যাদি।

৩. প্রাকৃতিক উপকরণের নামানুসারে : অর্ধচন্দ্রাসন, চন্দ্রাসন ইত্যাদি।

৪. ব্যবহারিক উপকরণের নামানুসারে আকর্ণধনুরাসন

৫. অননুকরণীয় দেহভঙ্গিমা অনুসারে : উৎকটাসন, উত্তনাসন ইত্যাদি ।

আসনের নিয়ম

আসনের নিয়ম

শোধন : ষটকর্মের ঘরে শরীর শোষন ও চৈতন্য সম্পন্ন হয়। শরীর শোধনের পর আসন করাটাই বাঞ্ছনীয়।

আসনের স্তর:আসনের বয়স পাঁচ বৎসর বয়স থেকে বৃদ্ধকাল পর্যন্ত, সকল মানুষই আসন করতে পারেন। তবে সকল আসন, সকল বয়সের জন্য প্রযোজ্য নয়। শারীরীক অবস্থা ও বয়স অনুসারে আসন নির্বাচন করতে হবে। এ জন্য যোগাসনের জন্য কোন ভালো প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিতে হবে। তবে সাধারণভাবে বয়সের বিচারে যে সকল আসনের পরামর্শ দেওয়া হয়, তা হলো- 

প্রথম স্তর: ৬ থেকে ১২ বছর উপযোগী বয়সের ছেলে ও মেয়েদের জন্য পদ্মাসন, পদহস্তাসন, অর্ধ-চক্রাসন, অর্ধ-চক্রাসন, চক্রাসন, চক্রাসন, ভুজঙ্গাসন, ধনুরাসন, পূর্ণ-ধনুরাসন, উষ্ট্রাসন, পূর্ণ-উষ্ট্রাসন, মৎস্যাসন, শশষ্কাসন, অর্ধ-মৎস্যেন্দ্রাসন, অর্ধ-কুর্মাসন, পশ্চিমোথানাসন, ভদ্রাসন, ব্যাঘ্রাসন, গডুরাসন, বৃক্ষাসন, বকাসন, ত্রিকোণাসন ও শবাসন।

দ্বিতীয় স্থর: ১৩ থেকে ১৬ বছর উপযোগী বয়সের ছেলে মেয়েদের জন্য প্রথম স্তরের সকল আসন করতে পারবে । সেই সাথে যে সকল করতে পারবে, তা হলো: পবন-মুক্তাসন, উথিত- পদাসন, শলভাসন, গোমুখাসন, হলাসন, জানুশিরাসন, বিভক্ত-জানুশিরাসন, বজ্রাসন, সুপ্ত-বজ্রাসন, আকর্ণ-ধনুরাসন, সর্বাঙ্গাসন, বদ্ধা-সর্বাঙ্গাসন, পূর্ণ-বদ্ধাসর্বাঙ্গাসন, মকরাসন, পূর্ণ-মকরাসন, দন্ডায়মান একপদ-শিরাসন, সিদ্ধাসন, কুক্কুটাসন।

তৃতীয় স্তর : ১৭ থেকে ৩০ বছর উপযোগী বয়সের নারী-পুরুষের জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় স্তরের সকল আসন করতে পারবে। সেই সাথে যে সকল করতে পারবে, তা হলো--গর্ভাসন, কর্ণ-পিঠাসন, শীর্ষাসন।

চতুর্থ স্তর : ৩১ থেকে ৪০ বছর উপযোগী বয়সের নারী-পুরুষের জন্য কিছু বাধ্যবাধকতা বিবেচনা করে সব আসনই করতে পারবে। মেরুদণ্ডে চাপ পড়ার জন্য দেহ ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে, এমন অসুস্থ ব্যক্তির জন্য চন্দ্রাসন, পূর্ণ-উদ্ভাসন, পূর্ণ-ধনুরাসন, বিভক্ত জানুশিরাসন, দণ্ডায়মান একপদ শিরাসন নিষিদ্ধ। হৃদরোগী ও উচ্চ রক্তচাপে জন্য শীর্ষাসনের সকল প্রকরণ নিষিদ্ধ

 পঞ্চম স্তর : ৪১ থেকে ৫০ বছর উপযোগী বয়সের নারী-পুরুষের জন্য এই বয়সীদের জন্য, পদ্মাসন, পবনমুক্তাসন, ভূজঙ্গাসন, মৎস্যাসন, সর্বাঙ্গাসন, হলাসন, জানুশিরাসন উপযুক্ত।

ষষ্ঠ স্তর : ৫০-এর বেশি বয়সের নারী-পুরুষের জন্য হাঁটা হচ্ছে সবচেয়ে ভালো শরীর চর্চা। শারীরীক সামর্থ্যানুসারে এবং যোগ প্রশিক্ষকের পরামর্শক্রমে দু একটি আসন করতে পারেন।

আসন শিক্ষা: প্রাথমিক অবস্থায় বই পড়ে আসন সম্পর্কে ধারণা নিতে পারেন। কিন্তু বই পড়ে আসন করাটা উচিত হবে না। কারণ, সঠিক আসন নির্বাচন, আসনের সঠিক পদ্ধতি জানা না থাকলে, উপকারের চেয়ে অপকারের সম্ভাবনাই বেশি হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে কোন অভিজ্ঞ যোগাসনের শিক্ষকের শরণাপন্ন হতে হবে। ভালো শিক্ষক হাতের কাছে না পেলে কোন ভালো যোগাসনচর্চা কেন্দ্রেও যেতে পারেন।

মানসিক ও শারীরীক অবস্থা: কোন মানসিক বা শারীরীক অসুবিধা নিয়ে আসনে বসবেন না। অবশ্য মন বা শরীরিক অসুবিধা দূর করার জন্য আসনে বসলে ভিন্ন কথা। এক্ষেত্রে যোগ শিক্ষকের পরামর্শ নিতে পারেন। যে কোনো আসন করার আগে মলমূত্র ত্যাগ করে, দেহের অস্বস্তিকে দূর করে নিতে হবে।

 শারীরীক শুদ্ধতা : আপনার নিজের শরীরের দুর্গন্ধ বা কুটকুটে ভাব যদি আপনাকে বিব্রত করে, তা হলে-- শরীর ধুয়ে নিন।ক্ষেত্রে পুরোপুরি স্নান করার প্রয়োজন নেই। যদি ঘরে বসে বা দাঁড়িয়ে স্নান করেন, তা হলে, অন্তত স্নানের আধঘণ্টা পরে আসনে বসুন। যদি পুকুরে বা কোন জলাশয়ে সাঁতার কেটে স্নান করেন, তা হলে-স্নানজনিত শ্রান্তি দূর না হওয়া পর্যন্ত আসনে বসবেন না। এক্ষেত্রে স্নানের পর এক বা দেড় ঘণ্টা পরে আসনে বসতে পারেন। আসনের কারণে, শরীরে ঘামের সৃষ্টি হয়, তাই আসনের পরে স্নান করলে, দেহের শুদ্ধতা বজায় থাকে। তবে এক্ষেত্রে আসনের ১৫ মিনিট পর স্নান করাটাই শ্রেয়।

৬. খাদ্য গ্রহণ : অত্যন্ত ক্ষুধার্ত বা ভরাপেটে আসনে বসবেন না। মোটামুটি খালি পেটে আসন করাই উত্তম। যদি সামান্য ক্ষুধা অনুভূত হয়, তা হলে--- এক গ্লাস পানি বা একটি ফল বা বিস্কুট খেয়ে নিতে পারেন।

আসনের সময়: আসনের জন্য কোন সঠিক সময় নেই। অর্থাৎ যে কোন সুময়েই আসন করতে পারেন। যেহেতু, আসন প্রতিদিন একই সময়ে করলে ফলাফল ভালো পাওয়া যায়। তাই আপনি দিনের এমন একটা সময় বেছে নিন, যে সময়টাতে আপনি প্রতিদিনই আসন করতে পারেন। সেই বিবেচনায় ভোৱে বা সন্ধ্যায় আসনের সময় নির্বাচন করতে পারেন। ভোরে শরীর কিছুটা অনমনীয় থাকে বলে, কোন কোন আসনে কিঞ্চিৎ অসুবিধা হতে পারে। তবে ভোরে মন সতেজ থাকে বলে, মনযোগ সহকারে আসন করা যায়। বিকেলে বা সন্ধ্যায় শরীর নমনীয় হয়, ফলে সকল আসনই স্বচ্ছন্দে করা যায়। অনেকে সারাদিনের কাজে ক্লান্ত হয়ে, ঘরে ফিরে সন্ধ্যায় আসনে বসতে উৎসাহ পান না। এক্ষেত্রে এঁরা রাতের খাবারের আধ ঘন্টা আগে আসন করে নিতে পারেন। 

আসনের স্থান ও পরিবেশ : আসন করতে হবে খোলা জায়গায়। ঘরের ভিতরে আসন করতে হলে, ঘরে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের জন্য জানালা ও দরজা উন্মুক্ত করে রাখতে হবে। তবে মশা, মাছি বা অবাঞ্ছিত শব্দ যাতে আসনের ব্যাঘাত না ঘটায়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। ঘরের ভিতরে খুব বেশি গরম অনুভূত হলে, হাল্কা করে পাখা চালিয়ে নিতে পারেন। মনে রাখবেন, শীতল পরিবেশ আসনের উপযুক্ত নয়। আসনের স্থান হবে সমতল এবং দৃঢ়। অর্থাৎ কোন উঁচু-নিচু বা কাৎ হওয়া স্থান আসনের উপযুক্ত নয়। যানবাহনে আসন করা উচিৎ হবে না। আসনের উপরিভাগ খুব বেশি শক্ত বা নরম হবে না। তাই আসনের স্থানে কম্বল জাতীয় আবরণ ব্যবহার করুন।

আসনের পোশাক : আসনের সময় ঢিলেঢালা পোশাক ব্যবহার করুন। পুরুষরা শুধু জাঙ্গিয়া পরেও আসন করতে পারেন। মেয়েরা প্যান্টি ও ব্রা পরে আসন করতে পারেন।পুরো নগ্ন হয়ে আসন করাটা স্বাস্থ্যসম্মত হবে না। আসনের সময়ে আন্ডারওয়্যার যাতে শরীরে চেপে না বসে। থাকে সেদিকে নজর রাখতে হবে।

যে সকল অসুস্থতার কারণে আসন নিষিদ্ধ : উচ্চরক্তচাপ, স্পন্ডিলোসিস, যক্ষ্মা, পুরিসি, জণ্ডিস, মেয়েদের ঋতুস্রাবকালীন সময়, গর্ভবস্থার প্রথম তিন মাস, প্রসবের পরে একমাস। অন্যান্য অসুস্থের ক্ষেত্রে সীমিত ও নির্দিষ্ট কিছু আসন করা যেতে পারে।

শারীরীক উপকারের জন্য সাধারণভাবে নির্বাচিত আসন আসনসমূহ

ব্যায়াম কত প্রকার ও কি কি, ব্যায়াম কি, শারীরিক ব্যায়াম, সকালে কি কি ব্যায়াম করা উচিত, প্রতিদিন কি কি ব্যায়াম করা উচিত, ব্যায়ামের নাম, অবাত ব্যায়াম কাকে বলে, ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা,

→ মাথা : শীর্ষাসন, শশঙ্গাসন, সর্বাঙ্গাসন, হলাসন, কর্ণ-পিঠাসন। 

→কণ্ঠদেশ সিংহাসন: মৎস্যাসন, সর্বাঙ্গাসন, হলাসন, শশঙ্গাসন, কর্ণ-পিঠাসন,

→ কাঁধ : গোমুখাসন, ধনুরাসন, উদ্ভাসন, অর্থ-চন্দ্রাসন, অর্থ-চক্রাসন, ভূজঙ্গাসন, সর্বাঙ্গাসন, আকর্ণ-ধনুরাসন, বকাসন।

→ বুক : ভুজঙ্গাসন, পূর্ণ-ভূজঙ্গাসন, ধনুরাসন, পূর্ণ-ধনুরাসন, উদ্ভাসন, পূর্ণ- উচ্চাসন, অর্ধ-চন্দ্রাসন, চন্দ্রাসন, অর্থ-চক্রাসন, চক্রাসন, মৎস্যাসন, সহজ প্রাণায়াম।

→ উদর ও বস্তিপ্রদেশ : পদহস্তাসন, জানুশিরাসন, পবনমুক্তাসন, পশ্চিমোথানাসন, হলাসন, কর্ণ-পিঠাসন, অর্ধ-কুর্মাসন, উত্থিত-পদাসন, চক্রাসন, চন্দ্রাসন 1

→ মেরুদণ্ড : ভুজঙ্গাসন, ধনুরাসন, পূর্ণ-ধনুরাসন, উদ্ভাসন, পূর্ণ-উদ্ভাসন, অর্ধ- মৎস্যেন্দ্রাসন, অর্ধ-চন্দ্রাসন, চন্দ্রাসন, শশঙ্গাসন, হলাসন, কর্ণ-পিঠাসন, পদহস্তাসন, অর্ধ-চক্রাসন, চক্রাসন ।

→ উরু ও তার সংযোগস্থল : জানুশিরাসন, বিভক্ত জানুশিরাসন, বিভক্ত- পশ্চিমোথানাসন, আকর্ণ-ধনুরাসন, মণ্ডুকাসন, মার্গাসন,

→ হাত : ত্রিকোণাসন, ব্যাঘ্রাসন, হস্ত-শীর্ষাসন (অধো মুখ বৃক্ষাসন), বন্ধ- পদ্মাসন, পূর্ণ-মকরাসন, বকাসন, ময়ূরাসন, গোমুখাসন ।

→ পা : বজ্রাসন, পদ্মাসন, বদ্ধ-পদ্মাসন, উৎকটাসন, ভদ্রাসন (বদ্ধ-কোণাসন), পদহস্তাসন, জানুশিরাসন, অর্ধ-চক্রাসন, চক্রাসন, অর্ধ-চন্দ্রাসন, চন্দ্রাসন, বৃক্ষাসন, দণ্ডায়মান একপদ শিরাসন, গরুড়াসন, ওজারাসন।

→ জননেন্দ্রিয় : ভদ্রাসন (বন্ধ-কোণাসন), উদ্ভাসন, শশঙ্গাসন, বিভক্ত- জানুশিরাসন ।

রোগ নিরামায়  সাধারণভাবে নির্বাচিত আসন আসনসমূহ

 কোষ্ঠবদ্ধতা : পবনমুক্তাসন, ভূজঙ্গাসন, অর্থ-চক্রাসন, পদহস্তাসন, অর্ধ- চন্দ্রাসন, মৎস্যাসন, হলাসন, সর্বাঙ্গাসন।

→ অজীর্ণ ও অনুদোষ :পবনমুক্তাসন, ভূজঙ্গাসন, শলভাসন, মৎস্যাসন, বজ্রাসন, সর্বাঙ্গাসন, ধনুরাসন, পশ্চিমোখানাসন, অর্থ-চক্রাসন।

→  আমাশয় : পবনমুক্তাসন, পদহস্তাসন, অর্থ-কর্মাসন, মৎস্যাসন, সর্বাঙ্গাসন পেটে বায়ু : পবনমুক্তাসন

→ উদরাময় : পশ্চিমোখাनাসন, অর্থ-কুর্মাসন ও পবনমুক্তাসন ।

→ স্থূলতা : পৰনমুক্তাসন, পদহস্তাসন, অর্থ-চন্দ্রাসন, ত্রিকোণাসন, উত্থিত- পদাসন, মৎস্যাসন, সর্বাঙ্গাসন এবং উদ্ভাসন, ধনুরাসন, হলাসন, বজ্রাসন। সাথে দিবা নিদ্ৰা নিষিদ্ধ।

→ কৃশতা : পবনমুক্তাসন, গোমুখাসন, অর্থ-কর্মাসন, শশঙ্গাসন, উষ্ট্রাসন, অর্ধ- মৎস্যেন্দ্রাসন, মৎস্যাসন ও সর্বাঙ্গাসন। সেই সাথে পুষ্টিকর খাবার দাবার

→ রক্তচাপ (উচ্চ/নিম্ন) : শবাসন, বজ্ৰাসন, অর্ধ-শলভাসন।

→ হাঁপানি : অর্ধ-শলভাসন, ভুজঙ্গাসন, পবনমুক্তাসন, মৎস্যাসন।

হাঁটার উপকারিতা

হাঁটার উপকারিতা
শরীর সোজা রেখে প্রথমে পায়ের গোড়ালি ও পরে পায়ের পাতা ফেলে সহজভাবে এগিয়ে চলাকে হাঁটা বলা হয়। হাঁটার কায়দা একেক জনের একেক রকম হতে পারে। দু'পায়ের ওপর সমান ভর দিয়ে মাথা উঁচু রেখে দৃষ্টি সোজা করে, বুক টানটান রেখে হাঁটা হচ্ছে সঠিক। লক্ষ রাখতে হবে, হাঁটার সময় পায়ের পতা যেন বেঁকে না যায় এবং সামনের দিকে সোজাসুজি পড়ে। তাহলে হাঁটার গতি ছন্দময় হয়ে উঠবে।

অনেকে মনে করেন, যারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত কেবলমাত্র তাদের জন্যে হাঁটা দরকার। এটা ঠিক নয়। হাঁটা সব বয়সের সব মানুষের জন্য একান্ত প্রয়োজন। সেটা তার অসুখ-বিসুখ থাকুক আর নাই থাকুক। হাঁটাই হচ্ছে সর্বোউৎকৃষ্ট ব্যায়াম। ইটিার কারণে শরীরের মাংশপেশী সুগঠিত হয়। হৃদপু, ফুসফুস, রক্তনালীর রক্ত চলাচল সতেজ থাকে। যার ফলে শারীরিক সুস্থতা বজায় থাকে এবং শরীর ও মন প্রযুক্ত থাকে। ফলে কাজে-কর্মে গতি বাড়ে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ৩০-৫০ মিনিট হাঁটা খুবই অপরিহার্য।



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Simple 10 Scenery Drawing Practice for Beginners step by step

Make Money Online: Unlocking Digital Opportunities