শিশুদের ১১ টি রোগের কারণ লক্ষণ ও ঘরোয়া চিকিৎসা | 11 Diseases in Children Causes Symptoms and Home Remedies

 শিশুরোগ Diseases of Children

শিশুরোগ (Diseases of Children)

তড়কা (Convulsion)

কারণ :-বীজাণু-দূষণ, জ্বরের সময় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া প্রভৃতি কারণে শিশুদের এই রোগ হয়।

লক্ষণ :- 103F-104°F পর্যন্ত জ্বর উঠতে পারে, স্থিচনি হয়, ছটফট করে চোখ উল্টে যায়, দাঁতকপাটি লেগে যায়।

আনুষঙ্গিক চিকিৎসা :-তাপমাত্রা বেশি থাকলে মাথায় ঠান্ডা পানি ঢালতে হবে এবং গরম পানিতে গামছা ভিজিয়ে গায়ে দিতে হবে।

শিশু উদারময় (Infantile Diarrhoea)

কারণ :-গুরুপাক দ্রব্য ভোজন, ক্রিমি জনিত, দাঁত ওঠা, ঠাণ্ডা লাগিয়া সর্দি কাশি হইলে, বীজাণুর আক্রমণ হইলে, লিভারের গোলযোগ স্তনদানকারীর ঐ সমস্ত রোগ থাকিলে শিশুদের এই রোগ হয়।

লক্ষণ :-হজম হয় না, পেট ফাঁপে, শিশু সবসময় ঘ্যানঘ্যান করে। অসুগন্ধযুক্ত নানাবর্ণ বিশিষ্ট তরল মল নির্গত হয়। বমি হতে পারে কখনো বা দু" একদিন ভালো থেকে থেকে উদারময় হয়। আম থাকে।

আনুষঙ্গিক চিকিৎসা :-সাগু, বারলি দিতে হবে। দিনে একবার ভাত দিতে হবে। দুধ খাওয়া বন্ধ থাকবে। স্তনদুগ্ধ চলবে। বিস্কুট এবং ছানা খাওয়ানো ভালো । lactodex baby food দেওয়া এবং অল্প মাত্রায় ফলের রস দেওয়া যাবে।

শিশুদের পেটে যন্ত্রণা (Colic Infantile)

কারণ :- স্তনপানে অম্লবৃষ্টি হইলে, আমাশয়ে ভোগা, কোষ্টকাঠিন্য, কৃम, লিভারের রোগ প্রভৃতি থেকে শিশুদের পেটে যন্ত্রণা বা ব্যথা হয় ।

লক্ষণ :-শিশু ঘ্যান ঘ্যান করে কাঁদে কখনো বা বেশি কাঁদে, পেটে হাত দিলেই কেঁদে ওঠে এবং শরীরটা মোচড়ায়, গা ভাঙ্গে, বমি করতে পারে। প্রস্রাব এবং অ্যাপেডি সাইটিসের প্রদাহও থাকতে পারে।

আনুষঙ্গিক চিকিৎসা : কোন রোগ থাকলে তার চিকিৎসা করতে হবে। হালকা পুষ্টিকর খাদ্য দিতে হবে। পেটে তেল ও পানি মালিশ করলে উপশম হয়

শিশুদের বমি (Vomiting)

কারণ :-বীজাণু দূষণ, গুরুপাক ভোজন, অগ্রদৃষ্টি, কৃমি থাকা, নোংরা পদার্থ মুখে দেওয়া বা গিলে ফেলা প্রভৃতি থেকে শিশুদের বমি হয়।

লক্ষণ :-কখনো অল্প এবং কখনো বা বেশি পরিমাণে বমি হয়, সমস্ত খাবার উঠে আসে।

আনুষঙ্গিক চিকিৎসা :-গ্লুকোজ বা ডাবের পানি অল্প অল্প দিতে হয়। কোন রোগের জন্য হচ্ছে তা নির্ণয় করে তার চিকিৎসা করতে হবে,

লিভারের গন্ডগোল (Liver disorders)

কারণ :-কার্ট জাতীয় খাদ্য বেশি খাওয়া, চা কফি অল্প বয়সে রোগে ভোগা প্রভৃতি থেকে লিভারের গন্ডগোল হয় ।

লক্ষণ :- লিভারের স্থানে ব্যথা হাত দিতে দেয় না। খাদ্য ভ

ক্ষুধামন্দা, পায়খানা কখনো সবুজ, কখনো হলুদ হয়, কোষ্ঠ থাকতে পারে দু-একদিন অন্তর পাতলা পায়খানা বা অল্প অল্প জ্বর হয়।

আনুষঙ্গিক চিকিৎসা :- হালকা পুষ্টিকর খাদ্য খেতে হবে। পেঁপের ঝোল খাওয়ানো ভালো ।গ্লুকোজ, প্রোটিনের খাওয়ানো ভালো।

কৃমি (Worm)

কারণ :-নোংরা ও বাসি খাবার খাওয়া, কাঁচা ফলমূল না ধুয়ে যাওয়া প্রভৃতির মাধ্যমে কৃমির ডিম পেটে প্রবেশ করে এছাড়া কিছু কৃমি পায়খানা করার সময় পারুয়ার বা পায়ের চামড়া ভেদ করে শরীরে যায় এবং পেটে আশ্রয় নেয়।

লক্ষণ :- শিশুরা ঘনঘন থুথু বার করে, পেটে ব্যথা বলে, বমি করে, পেট ফাঁপে, নাক ও পায়ু চুলকায়, ঘুমাতে ঘুমাতে পাত কিড়মিড় করে এবং চমকে পায়খানার গন্ডগোল প্রায়ই হয়। ক্ষুধামন্দা হয় শরীর শীর্ণকায় এবং পেট উঁচু হয়ে থাকে।

আনুষঙ্গিক চিকিৎসা : তেতো ফল বা খাবার খাওয়া উপকারী। খুব মিষ্ট খাবার খেলে এদের বৃদ্ধি ঘটে। পরিষ্কার জায়গায় বা পায়খানায় মলত্যাগ করা উচিত এবং মলত্যাগের সময় পায়ে জুতো রাখা উচিত। আনারস পাতার রস খেলে কৃমি মরে।

শিশুর সর্দিজ্বর (Cold & fever of Child)

শিশুর সর্দিজ্বর Cold & fever of Child

কারণ :-ঠান্ডা লাগা, বীজাণুর আক্রমণ, আবহাওয়া পরিবর্তন প্রভৃতি কারণে সর্দিজ্বর হয়।

লক্ষণ :-হাঁচি, কাশি, বুকে সাঁই সাঁই য বেশি হলে বমিও হতে পারে। জিহ্বা লেপাকৃত, হাত পা ঠান্ডা।

আনুষঙ্গিক চিকিৎসা :-ইষদুষ্ণ গরম পানিতে স্নান হিত কর। দুধ, সাগু, বার্লি, ফলের রস, বিস্কুট, মধু প্রভৃতি খাওয়াতে হয়। বেশি জ্বরে স্নান এবং ভাত খাওয়া নিষিদ্ধ ।

শিশুদের হুপিং কাশি (Whooping Cough)

কারণ :-ঠান্ডা লাগা, কস্ বীজাণুর আক্রমণ, সর্দিজ্বর থেকে পরে এই রোগ সৃষ্টি।

 লক্ষণ :-বরুণ ধরিয়া কাশি হয় মনে হয় যেন থাকে। কখনো কখনো বা না, কাশতে কাশতে বাঁধ করে কাশির শুরুতে হপ হপ করিয়া আওয়া।

আনুষঙ্গিক চিকিৎসা :-ভালোভাবে তেল মাখিয়ে ঈষদুষ্ণ গরম পানিতে গোসল করতে হবে। লবঙ্গ এবং মিছরি একসাথে সিদ্ধ করে খাওয়ালে উপকার হয়।

অসাড়ে মূত্রত্যাগ (Enuresis)

কারণ :-স্নায়বিক দুর্বলতা, ক্রিমি, মূত্রগ্রন্থির রোগ প্রভৃতি কারণে ঐ রোগ হয়। 

লক্ষণ :-শিশু বেশি বয়সেও বিছানায় প্রস্রাব করে ফেলে। প্রস্রাবে গন্ধ থাকে।

আনুষঙ্গিক চিকিৎসা :- শিশুকে রাত্রিতে অধিক পানি পান করতে দিতে নাই। মাঝরাত্রে একবার তুলে প্রস্রাব করাতে হবে তা হলে অভ্যাস হয়ে যাবে। প্রোটিন। জাতীয় খাদ্য বেশি মাছ, মাংস, ডিম, দুধ এবং ফলমূল খাওয়ানো উপকারী।

শিশুদের রিকেট (Rickets)

কারণ :-ভিটামিন D এর অভাবে এই রোগ হয়। তাছাড়া ফসফরাস এবং ক্যালসিয়ামের অভাবও এর অন্যতম কারণ।

লক্ষণ :- অস্থি কোমল, বিকৃত, বিবৃদ্ধ ও শীনহয়, দাঁত ওঠার সমস্যা, বুকের পাঁজরের সন্ধিস্থল উঁচু হয়, পায়খানা তরল হওয়া, শিশু দাঁড়াতে পারে না, মাথার তালু শক্ত হয় না।

আনুষঙ্গিক চিকিৎসা :- ঘাঁটি সরিষার তেল মাখিয়ে শিশুকে সূর্যোদয় এবং সুখ সময় রোদে দেওয়া ভালো। দুধ, ছানা, ডিম, মাছ প্রভৃতি খেতে দিতে যাবে। এছ ফলের রসও উপকারী।

কর্ণমূল প্রদাহ (Mumps)

কারণ :- আবহাওয়া পরিবর্তন কালে অথবা অন্য সময়ে ঠান্ডা লেগে এবং বীজাণুর আক্রমণে এই রোগ হয়।

লক্ষণ :- নিচের চোয়ালের কোনে যে গ্রন্থি আছে তা খুব শক্ত হয় এবং ফুলে ওঠে। জ্বর, গাবমি ভাব, গলা ফোলা, কানের যন্ত্রণা হয়, খাদ্য গিলে খেতে কষ্ট হয়।

আনুষঙ্গিক চিকিৎসা : রোগাক্রান্ত শিশুটিকে পৃথকভাবে রাখা উচিত। গরম পানিতে নুন ফেলে গার্গলকরা এবং আক্রান্ত স্থানে গরম সেঁক দেওয়া উপকারী। যাতে না ঠাণ্ডা লাগে সেদিকে নজর রাখা উচিত। হালকা ও পুষ্টিকর খাদ্য খেতে দিতে হবে।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Simple 10 Scenery Drawing Practice for Beginners step by step

Make Money Online: Unlocking Digital Opportunities