ভিটামিনের অভাবে শরীরে যে সব রোগ হতে পারে | Vitamin Deficiency Diseases
জীবন ধারণতা দেহকে সুস্থ-সবল, কার্যক্রম ও দেহ বৃদ্ধির জন্যে যে সব উপাদান প্রয়োজন তাকে খাদ্য বলে। সাধারণত বিভিন্ন প্রকার জৈব রাসায়নিক পদার্থকে আমরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে থাকি।
প্রত্যেকের দেহ সম্পর্কে যেমন ধারণা থাকা দরকার তেমনি দেহ গঠন শরীরকে কার্যক্ষম রাখতে প্রয়োজনীয় খাদ্য সম্পর্কে জ্ঞান থাকা দরকার। খাদ্য ছাড়া কোনো মানুষ বাঁচতে পারে না। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত দেহের ব্য প্রয়োজন। খাদ্য দেহের চাহিদা পূর্ণ করে।
খাদ্যের উপাদান
খাদ্যে ৬ প্রকার উপাদান থাকে।
যেমন-
(১) প্রোটিন
(5) কার্বোহাইট্রেড বা শর্করা
(৩) স্নেহপদার্থ
(৪) ধাতব লবণ বা খনিজ পদার্থ
(৫) ভিটামিন
(৬) পানি।
খাদ্যের কাজ
দেহ যন্ত্রকে সচল রাখতে খাদ্য যে সব কাজ করে থাকে তা নিচে তুলে ধরা হলো:
(১) দেহের গঠন ও বৃদ্ধি সাধন
(২) দেহের ক্ষতিপূরণ ও পরিশোষণ
(৩) দেহে তাপ উৎপাদন
(৪) শরীরে শক্তি সৃষ্টি করা
(৫) পেশী পরিচালনা করা
(৬) দেহে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
(৭) আভ্যন্তরীণ কার্যসমূহ নিয়ন্ত্রণ করে দেহ সুস্থ রাখা।
মানবদেহকে সুস্থ-সবল রাখতে খাদ্য গ্রহণ একান্ত অপরিহার্য। পক্ষান্তরে যে প্রক্রিয়ায় জীবদেহের খাদ্যদ্রব্য পরিপাক ও পরিশোধিত হয়ে দেহের কোষে কোষে ছড়িয়ে পড়ে এবং দেহের বৃদ্ধি সাধন, রক্ষণাবেক্ষণ ও শক্তি উৎপাদন করে তাকে পুষ্টি বলে। পুষ্টি প্রক্রিয়াকে বজায় রাখার জন্যে দেহে খাদ্যের প্রয়োজন।
কোন খাবারে কত ক্যালরি
১ টি গাজর=৪০ ক্যালরি
১ কাপ ভুট্টা ভাজা
১ কাপ আটা=
টি আলু ১ =১০০ ক্যালরি
টি টমেটো=২৫ ক্যালরি
১ টি পেঁয়াজ=২৬ ক্যালরি
১ কাপ সেদ্ধ লাল চালের ভাত=১৮৫ ক্যালরি
১ টি শশা=২০ ক্যালরি
১ কাপ চিড়ে=৩৯ ক্যালরি
১ টি মূলা ১ টি আপেল=২ ক্যালরি
১ কাপ সেদ্ধ বালি=২২০ ক্যালরি
১ কাপ নুডুলস=২১৬ ক্যালরি
১ টি পেয়ারা=১০০ ক্যালরি
১ কাপ রান্না ভাল
টি আম=১০০ ক্যালরি
১ রুপ মটর ডাল=২০০ ক্যালরি
১ টি পেঁপে=৪০ ক্যালরি
১০০ গ্রাম ইলিশ মাছ=২৭০ ক্যালরি
১ টি কমলালেবু=৬০ ক্যারি
১০০ গ্রাম রুই মাছ=৯৭ ক্যালরি
১ টি ডিম=১০০ গ্রাম মাগুর মাছ
কই মাছ=১৫৬ ক্যালরি
১ কাপ পালংশাক=১৫ ক্যালরি
১০০ গ্রাম চিতল মাছ=
১ টি ফুলকপি=
১ টি বাঁধাকপি=২০
১০০ গ্রাম কাতলা মাছ=১১১ ক্যালরি
১০০ ভেটকি মাছ=৭৯ ক্যালরি
১ টি কুমড়ো =৮০ ক্যালরি
১ টি বিট=৭২ ক্যালরি
চামচ বাদম তেল=১২০ ক্যালরি
১ চামচ তিলের তেল=১২০ ক্যালরি
১ চামচ অলিভ তেল=১২০ ক্যালরি
১ টি সয়াবিন=১১২ ক্যালরি
১ চামচ সরিষার তেল=১২০ ক্যালরি
১ টি আনারস =৮১ ক্যালরি
১ টি ছোট চিংড়ি=২০৬ ক্যালরি
১ টি গলধা চিংড়ি=- ১৬৪ ক্যালরি
১ চামচ সূর্যমুখী তেল =১২০ ক্যালরি
১ গ্লাস কমলার রস=১১০ ক্যালরি
১ গ্লাস আপেলের রস=১১৭ ক্যালরি
১ কাপ দই=১৪৪ ক্যালরি
১ ফালি তরমুজ=১১০ ক্যালরি
১ কাপ ছানা=১৬৫ ক্যালরি
১ স্লাইস পাউরুটি=৬০ ক্যালরি
১ কাপ মখন=১০০ ক্যালরি
১ গুচ্ছ শালুক=১৭ ক্যালরি
১ কাপ খোল=১০০ ক্যালরি
১ কোয়া রসুন=৬ ক্যালরি
একজন বয়স্ক লোকের প্রতিদিনের খাবার
দামি খাবার:
চাল (চিকন)==২৪০ গ্রাম
গম (পাউরুটি, বিস্কুট)=১২০ গ্রাম
মাংশ= ৬০ গ্রাম
মাছ (রুই, কাতলা)= ৬০ গ্রাম
মাখন=৩০গ্রাম
(পালং, আলু, পটল ইত্যাদি)
তেল, ঘি জাতীয় ৬০ মি. লি.
ফল, (কলা, কমলা, আপেল,আম, পেয়ারা ইত্যাদি)
ডিম১টা
১/৪ লিটার
সস্তা খাবার:
চাল (মোটা)=২৪০ গ্রাম
গম (রুটি)=২৪০ গ্রাম
ডাল জাতীয়=৮০ গ্রাম
ছোট মাছ= ৬০ গ্রাম
মূল জাতীয়=১২০ গ্রাম
শাক=৯০গ্রাম
সবজি আলু, গাজর, মূলা, পুঁই পালংশাক=৯০গ্রাম
চিনি,গুড়= 30 গ্রাম
ফল= ১
পূর্ণ বয়স্ক একজনের এক বেলার খাবার
ভাত, রুটি জাতীয়=১৫০ গ্রাম
আলু ও অন্য ভর্তা জাতীয়=8০
ডাল, ভাজা মাছ জাতীয়=৬০ গ্রাম
লাল, পুঁই পালংশাক=১০০ গ্রাম
পেঁপে, পটল, কুমড়া জাতীয় =১০০ গ্রাম
ব্যায়ামকারীগণ ব্যায়াম অনুশীলন শেষে শবাসনে বিশ্রামের পর গরম দুধ শরবত, স্যুপ, খাবার স্যালাইন, ভিজানো ছোলা, বাদাম প্রভৃতি খেতে পারেন। যাদের উচ্চ রক্তচাপ নেই তারা ১টা করে ডিম খেতে পারে।
বয়স অনুপাতে প্রোটিনের পরিমাণ
1-6 বছর=২৫ থেকে ৪৫ গ্রাম
6-9 বছর =৬০ থেকে ৬৫ গ্রাম
বালক 10-17বছর =৭৫ থেকে 80 গ্রাম
বালিকা 10-17বছর =25 থেকে 45গ্রাম
পুরুষ 18-25বছর = 25 থেকে 45 গ্রাম
মেয়ে 18-25বছর =৭০ থেকে ৭৫ গ্রাম
পুরুষ 25-60 বছর = 60 থেকে 65 গ্রাম
মহিলা 25-60 বছর=45 থেকে 50 গ্রাম
কোন খাদ্যে কী ভিটামিন
ভিটামিন-ডি : টেকি ছাঁটা চাল, লাল আটা, ডিমের কুসুম প্রভৃতি।
ভিটামিন -এ : শাক-সবজি, টমেটো, লেবু, কমলা প্রভৃতি। ডিমের কুসুম, মাছের তেল, সুখ ইত্যাদি। ডিম, লেটুস, শাক-সবজি প্রভৃতি।
ভিটামিন-কে: সব ধরনের শাক-সবজি।
ভিটামিনের অভাবে শরীরে যে সব রোগ হতে পারে
ভিটামিন 'এ' এর অভাবে
(ক) রাতকানা রোগ হয়।
(খ) চোখ লাল হয়ে ফুলে যায়
(গ) ত্বকের বাহ্যিক আবরণ নষ্ট হয়ে যায়।
(ঘ) গলা জিহ্বা খরখরে হয়ে জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়।
ভিটামিন বি১ এর অভাবে
(ক) বেরিবেরি রোগ হয়।
(খ) মানসিক ক্লান্তি আসে।
(গ) খাওয়ার অরুচি দেখা যায়
(ঘ) স্নায়ুতন্ত্রের স্থায়ী ক্ষতি সাধন করে।
ভিটামিন 'বি'২ এর অভাবে
(ক) দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি হ্রাস পায়
(গ) মুখে যা হয় এবং চোখের কণিকার ক্ষতি হয়
(গ) ঠোঁটের কোন ও মুখের চারদিকে ফেটে যায়
ভিটামিন 'বি'ও এর অভাবে
(ক) স্নায়ুতন্ত্রের ও পরিপাকতন্ত্রের স্বাভাবিক কাজ।
(খ) পোলরা নামক রোগ হয় ইত্যাদি।
ভিটামিন 'বি১২' এর অভাবে
(ক) মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়।
(খ) অক্সিজেন পরিবহণকারী হিমোগ্রোবিনের স্বল্পতা দেখা দেয়।
ভিটামিন 'সি' এর অভাবে
(ক) স্কার্ভি রোগ
(গ) রক্ত জমাট বাধতে পারে না।
(গ) দাঁতের মাড়ি ফুলে যায়, পুঁজ পড়ে, রক্ত বের হয় ইত্যাদি
(খ) যা সহজে তাকায় না।
(ঙ) সর্দি, কাশি, খুব সহজেই আক্রমণ করে।
ভিটামিন 'ডি' এর অভাবে
(ক) শিশুদের রিকেট রোগ হয়
(খ) বয়স্কনের অস্থিক্ষয় রোগ দেখা যায়।
(চ) ওটামিন 'ই' এর অবাধে
ভিটামিন 'ই' এর অভাবে
(ক) ভিটামিন ই এর অভাবে যে সমস্ত রোগ দেখা
দেয় তা সম্বন্ধে আজ পর্যন্ত তেমন কিছু জানা যায়নি।
তবে 'ই' এর অভাবে শরীরের মাংসপেশী দুর্বল হয়ে
পড়ে।
ভিটামিন 'কে' এর অভাবে
(ক) ভিটামিন 'কে' এর অভাবে রক্ত সহজে জঘাট
বাঁধে না, ফলে শরীরে কোনো রক্তক্ষরণ শুরু হলে
সহজে বন্ধ হয় না এবং অনেক ক্ষেত্রে মানুষ মৃ পতিত হয়।
আরো পড়ুন: জেনে নিন মানবদেহের তথ্য এবং বিভিন্ন অঙ্গসমূহ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন